Politics
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) তাদের হারানো স্বায়ত্তশাসন পুনরুদ্ধারের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।
সম্প্রতি, বিটিআরসি একটি চিঠির মাধ্যমে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে যেন সংস্থার স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে আইনি ধারা সংশোধন করা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকারের এই নিয়ন্ত্রণের ফলে কাজের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা এবং নেতিবাচক রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা বাজার নিয়ন্ত্রণে স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা হ্রাস করেছে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী বলেন, ২০১০ সালের আইনের সংশোধনের ফলে বিটিআরসির স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে। তিনি বলেন, “কাকে লাইসেন্স দেওয়া হবে, কাকে দেওয়া হবে না, কারটা বাতিল হবে, কাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া যাবে—এই সবকিছুর জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হয়। তাহলে এই কমিশনের ভূমিকা কী, সে প্রশ্ন এসে যায়।”
বিটিআরসির কাজে সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার একটি উদাহরণ হলো আইজিডব্লিউ লাইসেন্স নিয়ে শামীম ওসমান পরিবারের জালিয়াতির ঘটনা। আওয়ামী লীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পরিবার সরকারের ১২৬ কোটি টাকা পাওনা ফাঁকি দিতে নিজেদের কোম্পানি তিন ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করে। এ ক্ষেত্রে জালিয়াতি করে তাঁদের মালিক দেখানো হয়। বিটিআরসি সূত্র জানায়, মালিকানা হস্তান্তরের সময় এ-সংক্রান্ত অনুমোদন খুব দ্রুত দিয়েছিল মন্ত্রণালয়।
বিটিআরসির চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, সম্প্রতি আয়োজিত বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে ইন্টারনেট–সেবা বন্ধের সংস্কৃতি ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের ঘাটতির বিষয়ে তাঁদের উদ্বেগ জানিয়েছেন। বিটিআরসি এই ইন্টারনেট বন্ধ করার আইনি ধারা রহিত করার বিষয়ও চিঠিতে যুক্ত করেছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, বিটিআরসির স্বাধীনতা ও জবাবদিহির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে নতুন আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এছাড়া, মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ছয়টি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পূর্বানুমতির প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিটিআরসির এই উদ্যোগ দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে, সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যকর আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।